করমচা গাছ একটি ঝোপতলা ধরনের শক্ত জাতের কাঁটাওয়ালা গুল্ম। করমচা ফুল দেখতে কিছুটা কুন্ধ ফুলের মতো এবং এর বড় সাদা ও ফিকে গোলাপি রঙের সুমিষ্ট গন্ধ রয়েছে। করমচার কাঁচা ফল গাঢ় সবুজ এবং পাকলে লাল হয়ে যায়। এই ফলটি অত্যন্ত টক স্বাদের।
ফেব্রুয়ারি মাসে গাছে ফুল আসে এবং ফল ধরে এপ্রিল-মে মাসে। বর্ষায় ফল পাকে। করমচা চাষের জন্য জমি উঁচু হলেই ভালো, তবে নিচু জমিতেও চাষ করা সম্ভব যদি পানি নিষ্কাশনের ভালো ব্যবস্থা থাকে।
করমচা খুব শক্ত ধরনের গাছ এবং এর দেহে আঠালো রস থাকে। এই গাছটি বাংলাদেশসহ এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে পাওয়া যায়। এই গাছের সবকিছুতেই রয়েছে ঔষধি গুণাগুণ।
![]() |
করমচা |
পুষ্টিগুণ
প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছে:
- এনার্জি: ৬২ কিলোক্যালরি
- কার্বোহাইড্রেট: ১৪ গ্রাম
- প্রোটিন: ০.৫ গ্রাম
- ভিটামিন-এ: ৪০ আইইউ
- ভিটামিন সি: ৩৮ মিলিগ্রাম
- রিবোফ্লাভিন: ০.১ মিলিগ্রাম
- নিয়াসিন: ০.২ মিলিগ্রাম
- আয়রন: ১.৩ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম: ১৬ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম: ২৬০ মিলিগ্রাম
- কপার: ০.২ মিলিগ্রাম
ঔষধিগুণ
১। করমচায় ভিটামিন সি-তে ভরপুর তাই করমচা খেলেই মুখে রুচি আসে।
২। করমচা খেলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে ও হৃদপিন্ড ভালো থাকে।
৩। করমচা খেলে মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাঁশি ভালো হয়।
৪। করমচা খেলে যকৃত ও কিডনির উপকার হয়।
৫। করমচা কৃমিনাশক হিসেবে ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে।
৬। ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য এ ফল খুব উপকারী।
৭। বাতরোগ কিংবা ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারী।
৮। করমচাতে রয়েছে ভিটামিন এ তাই চোখের জন্য খুবই উপকারী।
৯। নিয়মিত করমচা খেলে ত্বক ভালো থাকে।
১০। করমচা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়।
১১। করমচা গাছের মূলে সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে হৃদরোগ নিরাময় হয়।
১২। করমচা ওজন কমাতে সাহায্য করে।
১৩। করমচা স্কার্ভি, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।